আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের কঠিন জগতে পা রাখার পর তিন-তিনটি বিশ্বকাপ দেখেছেন তিনি। এর প্রথমটি ২০১৫ সালের ওয়ানডে বিশ্বকাপ খেলেছেনও। তবে পরের দুটি আসর তাঁর জন্য হয়ে থেকেছে বেদনার প্রতিশব্দই। ২০১৬ সালে ভারতে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ খেলতে গিয়ে সন্দেহজনক বোলিং অ্যাকশনের অভিযোগ মাথায় নিয়ে ছিটকে পড়তে হয়। সেবার তবু গিয়েছিলেন, কিন্তু চোট কাটিয়ে উঠলেও ২০১৯ সালের ওয়ানডে বিশ্বকাপ দলে জায়গাই হয়নি তাঁর। লম্বা বিরতি পড়ে গেলেও অবশেষে আরেকটি বিশ্ব আসরে বোলিংয়ের উত্তেজনায় টগবগ করে ফুটতে শুরু করে দিয়েছেন তাসকিন আহমেদ। এই সময়ে অবশ্য পুরনো বেদনায় একদমই ভারাক্রান্ত হচ্ছেন না এই ফাস্ট বোলার, ‘অতীত ভেবে লাভ নেই, আমি বরং সামনেই তাকাতে চাই।’ সামনেই টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ।

অক্টোবর-নভেম্বরে ওমান এবং সংযুক্ত আরব আমিরাতে অনুষ্ঠেয় সেই আসরে নিজেকে মেলে ধরার ভাবনায়ও ডুব দিয়ে আছেন তিনি। এই আসর সামনে রেখে যে তাঁর খুব ম্যাচ প্রস্তুতি হয়েছে, এমনও নয়। টিম কম্বিনেশনের কারণেই অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে পাঁচ ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজে খেলা হয়নি একটি ম্যাচও। নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে প্রথম চার ম্যাচেও নয়। শুধু শেষ ম্যাচটি খেলা তাসকিন জানেন, মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামের ধীরগতির অসমান বাউন্সের উইকেটে তাঁর মতো দুরন্ত গতির বোলারদের তেমন কিছু করার নেই। সেই সঙ্গে এটিও অজানা নয় যে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের উইকেট হবে একদমই ভিন্ন চরিত্রের। যে চরিত্রের সঙ্গে মানানসই বোলিং নিয়েই এখন ভাবনা তাসকিনের, ‘যে উইকেটে যেভাবে বোলিংয়ের চাহিদা, মানসিকভাবে নিজেকে সেভাবে তৈরি রাখাটা খুব গুরুত্বপূর্ণ।

 

 

কারণ এখানে যে উইকেটে আমরা খেললাম আর ওখানে (বিশ্বকাপে) যেরকম উইকেটে খেলব, অবশ্যই এক রকম নয়।’ নয় বলেই বিশ্বকাপে নিজের শক্তিতেই ফিরে যাওয়ার তাগিদ অনুভব করছেন তাসকিন। দেশে গত কিছুদিন স্লোয়ার-কাটারের জয়জয়কার থাকলেও ওমান, দুবাই, আবুধাবি কিংবা শারজার উইকেটে গতির কোনো বিকল্প আপাতত দেখছেন না তরুণ এই ফাস্ট বোলার, ‘আমি চেষ্টা করব নিজের শক্তিতেই ফিরে যেতে, যেটি ঘণ্টায় ১৪০ কিলোমিটারের বেশি গতিতে বোলিং করা। চেষ্টা থাকবে সিমটা যেন সঠিক জায়গায় হিট করাতে পারি। উইকেট অনুকূল হলে এই ব্যাপারটিও নিশ্চিতভাবেই খুব কাজে দেবে।’ অবশ্য বিশ্বকাপের মতো বোলারদের চ্যালেঞ্জও আগাম অনুমান করে রাখতে হচ্ছে তাঁকে, ‘কন্ডিশন যেরকমই হোক না কেন, পরিকল্পনা অনুযায়ী নিজেকে মেলে ধরতে হবে। যখন কাটার কম ধরে, তখন ইয়র্কার বা লেন্থ বলের প্রয়োগটা অনেক গুরুত্বপূর্ণ হয়ে দাঁড়ায়।

 

আইসিসির ইভেন্ট হওয়ায় এটিও আমাদের মাথায় রাখতে হবে যে উইকেট স্পোর্টিং অথবা ফ্ল্যাট হবে। বোলারদের জন্য যা বাড়তি চ্যালেঞ্জই। তবে একই সময়ে পরিকল্পনার প্রয়োগটা ভালোমতো করতে পারলে সুযোগ থাকবে বোলারদেরও।’ তাসকিন সেই সঙ্গে মুখিয়ে আছেন ওমান এবং আমিরাতে বোলিংয়ের চ্যালেঞ্জ নিতেও, ‘ওমান এবং আমিরাতে এই প্রথমবারের মতো খেলব বলে আমি রোমাঞ্চিতও।’ প্রস্তুতির জন্য একটু আগেভাগেই ওমান চলে যাবে বাংলাদেশ দল। বিশ্বকাপে প্রথম ম্যাচ খেলতে নামার আগে সময়টা কাজে লাগাতেও মরিয়া এই পেসার, ‘আমরা ১০ দিনের মতো সময় পাব ওখানে গিয়ে। তিনটি প্রস্তুতি ম্যাচও খেলার কথা আছে। সময়টা কাজে লাগাতে চাই।’